ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদের নাম লিপিবদ্ধ করার দাবী |
****** লিখেছেন: নূর আলম, আইএনবি |
এ দেশের শ্রেষ্ঠ একটি কলেজ ময়মনসিংহ, আনন্দ মোহন কলেজ। ময়মনসিংহ শহরের হামিদ উদ্দিন রোড, কলেজ রোড এবং কাচিঝুলী মহল্লার বিস্তৃত এলাকা জুড়ে কলেজটি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু হয় ১৯০১ সালে। সেসময় ছিলো ব্রিটিশ আর জমিদারদের দ্বৈত শাসন। কঠোর অনুশাসন। কিন্তু, এরপরও শিক্ষা বিস্তারের কোন কমতি ছিলো না। এ অঞ্চলে। আনন্দমোহন কলেজ প্রতিষ্ঠার পেছনে রাজা জমিদারদের পাশাপাশি দুই ব্যক্তি দুই বন্ধুর ঘামের ফোঁটা আজও আনন্দ মোহন কলেজের অট্টালিকার প্রতিটি ইটের পাঁজরে গ্রথিত হয়ে আছে। এক বন্ধু ব্যারিস্টার আনন্দ মোহন বসু। ওই সময়ের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শিক্ষাবিদ রাজনীতিক সমাজ সংস্কারক। আরেক বন্ধু, ময়মনসিংহ জেলার প্রথম মুসলিম গ্র্যাজুয়েট শিক্ষানুরাগী মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহ্মদ। কালের বিবর্তনে ব্যারিস্টার আনন্দ মোহন বসু ইতিহাসের পাতায় উঠে এসেছেন কিন্তু মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ রয়ে গেছেন ইতিহাসের ছাইচাপা আগুনে। দুই বন্ধুই ছিলেন আনন্দ মোহন কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রথম দুই সিপাহশালার। স্মর্তব্য, ময়মনসিংহ শহরের হামিদ উদ্দিন রোড মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ এর স্বাক্ষ্য বহন করছে আজও। ময়মনসিংহের অন্যতম প্রবক্তা পুরুষ, ধর্ম পরায়ন মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ ছিলেন শিক্ষানুরাগী এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। যতদুর জানা যায়, নিকটতম আত্মীয় এক বৃদ্ধা ছাড়া হামিদ উদ্দিন আহমদ এর নাতনী মোসাম্মৎ ফজিলাতুল নেছা ওরফে লাইলী বেগম কেউ আর বেঁচে নেই। আনন্দ মোহন কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য এই ছাই চাপা আগুন ব্যক্তিটি কাচিঝুলীতে ২৬ বিঘা জমি অকাতরে দান করেই নিজ দায়িত্ব থেকে সরে যাননি সেই সাথে তার প্রিয়তম বন্ধু আনন্দ মোহন বসু’র নামে কলেজটির নামকরণের প্রস্তাব করেন এবং ১৯০৮ সালের শেষের দিকে মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমেদের প্রস্তাব মত কলেজটি আনন্দ মোহন বসুর নামানুসারে আনন্দ মোহন কলেজ রাখা হয় এবং শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ এর মতো একজন প্রজ্ঞা সম্পন্ন উদার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্বের কারণেই আজ এটা সম্ভব হয়েছে। আনন্দ মোহন কলেজ প্রতিষ্ঠার আড়ালে যে মানুষটি সেই সময়ে ২৬ বিঘা জমি নির্বিঘেœ নিঃশ্চিন্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য দিয়ে দিতে পারেন তিনি তো আমাদের প্রাতঃস্মরণীয়। প্রতি মুহুর্তের অবিস্মরণীয় এক নাম। অথচ, এতকাল পরও আনন্দ মোহন কলেজ এই মহান ব্যক্তিটির জন্যে কী করেছে তা ময়মনসিংহবাসীকে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। আনন্দ মোহন কলেজ প্রতিষ্ঠার পেছনে যাদের অসামান্য অবদান তাদের মধ্যে অন্যতম পথিকৃৎ মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ একথা অকপটে সবাই বলে গেছেন। আনন্দ মোহন কলেজের ১শ বছরের পূর্তি অনুষ্ঠানের বক্তব্যে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কলেজটি প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে অন্যতম প্রধান পুরুষ হিসেবে মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ-এর নাম বিনয় চিত্তে স্মরণ করেছেন। কিংবদন্তীর এই প্রাণ পুরুষ মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ এর কাছে সবিনয় ঋণ স্বীকার করে ময়মনসিংহবাসীকেও সেখান থেকে উত্তাপ নেয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন আনন্দ মোহন কলেজ তাকে চিরস্মরণীয় করে রাখা। তার বন্ধু, আনন্দ মোহন বসু আজ যদি দেখতে পেতেন তারই বন্ধু মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ এর আনীত প্রস্তাবে তার নামটির পাশে তার বন্ধুর নামটি নেই, তাহলে তিনি (আনন্দমোহন বসু) কি কষ্ট পেতেন না? বর্তমান প্রেক্ষাপটে সময় বদলেছে, বদলেছে দিন। কালের আবর্তনে স্বাভাবিক ভাবেই বর্তমান প্রজন্ম ভুলতে বসেছে, তাদের স্বর্ণখচিত অতীতকে যে অতীত, একটি স্বর্নোজ্জল বর্তমান এই প্রজন্মকে উপহার দিয়েছে। যার পেছনের মানুষদের নাম আজ অজানা থেকেছে। কিন্তু ইতিহাস, ইতিহাসের পথেই চলে এবং একদিন না একদিন সেই ইতিহাসই সময়ের মূর্ত প্রতীক হয়ে আমাদের সামনে সসম্মানে এসে দাঁড়িয়ে যাবে। মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ এর নাম তখন গর্বচিত্তে ময়মনসিংহবাসী স্মরণ করবেন। এদিকে, ময়মনসিংহবাসী মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমদ এর নাম আনন্দ মোহন কলেজের প্রধান ফটকে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে লিপিবদ্ধ করার জন্য সর্ব মহলের দৃষ্ট আকর্ষণ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে প্রথমত: আনন্দ মোহন কলেজ কর্তৃপক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি প্রস্তাবনা আকারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে পারেন। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন কেন এই বিষয়টি উত্থাপিত হয়নি, তা নিয়েও অনেক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আনন্দমোহন কলেজের ছাত্রাবাসের একটি হলের নাম, একটি ল্যাবরেটরীর নাম একটি মিলনায়তনের নাম, এমনকি নিদেনপক্ষে আনন্দমোহন কলেজের বিশাল মাঠের একটি জায়গায় অন্তত একটি মসজিদ মৌলভী হামিদ উদ্দিন আহমেদের স্মরণে নির্মিত হলে হয়তো বা আমরা দায়মুক্ত হতে পারতাম। তথ্যসূত্র: আইএনবি |
Pages
বিষয় সূচী
- ওয়েব ডায়েরী (2)
- কলেজ ইতিহাস (3)
- জব সাইট (1)
- বাংলা (1)
- বিসিএস প্রস্তুতি (4)
- বিসিএস প্রিলিমিনারী (1)
- বিসিএস লিখিত (1)
Abdullah Al Imran এর টেকটিউনস
Friday, January 27, 2012
একটি আত্মপর্যালোচনা
বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি : বাংলা
পোস্টটি লিখেছেন: এম সাখায়েত শাহীন
সুপ্রিয় ৩২তম বিসিএস পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিন। আপনাদের পরীক্ষার প্রস'তি নেয়ার সুবিধার্থে আজ‘বাংলা’ বিষয় থেকে ১৮টি প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো।
১। আনোয়ার পাশা রচিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস কোনটি?
ক) নীড় সন্ধানী খ) রাইফেল রোটি আওরাত
গ) খোয়াবনামা ঘ) চিলে কোঠার সেপাই
২। কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম প্রকাশিত নাট্যগ্রন'-
ক) ঝিলিমিলি খ) বাঁধনহারা গ) অগ্নিবীণা ঘ) মুক্তি
৩। জীবনানন্দ দাশের জীবনকাল কোনটি?
ক) ১৯০৩-১৯৭৬ খ) ১৯৩৫-১৯৭২
গ) ১৮৯৯-১৯৫৪ (ঘ) ১৮৭৭-১৯৫৭
৪। বাংলা সাহিত্যে ব্যঙ্গ ধারার সাহিত্য রচনা করেন-
ক) আবুল হাসান খ) আবুল ফজল
গ) উইলিয়াম কেরি ঘ) আবুল মনসুর আহমেদ
৫। ‘সত্য পীরের পাঁচালী’ গ্রন'টির রচয়িতা-
ক) মানিক দত্ত খ) বিজয় গুপ্ত
গ) ভারতচন্দ্র রায় ঘ) বিদ্যাপাত্র
৬। সৈয়দ সুলতান রচিত বিখ্যাত গ্রন' কোনটি?
ক) নবীবংশ খ) ইউসুফ-জোলেখা
গ) গীতরত্ন ঘ) কাব্য জিজ্ঞাসা
৭। বাংলা ছোটগল্পের জনক বলা হয় কোন কবিকে?
ক) মোহিতলাল মজুমদারকে খ) যতীন্দ্রমোহন বাগচীকে গ) মীর মশাররফ হোসেনকে ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে
৮। ‘বনি আদম’ গোলাম মোস্তফা রচিত-
ক) কাব্যগ্রন' খ) গদ্যগ্রন' গ) উপন্যাস ঘ) নাটক
৯। কোন বানানটি শুদ্ধ?
ক) বাল্লীকি খ) বাল্মিকী গ) বাল্মীকি ঘ) বাল্মীকী
১০। যেসব অব্যয় বাক্যের অন্যপদের সঙ্গে সম্বন্ধ না রেখে স্বাধীনভাবে নানাবিধ ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয় তাদের বলা হয়-
ক) সংযোজক অব্যয় খ) অনন্বয়ী অব্যয়
গ) অনুকার অব্যয় ঘ) অনুসর্গ অব্যয়
১১। ‘কালো’-এর প্রতিশব্দ-
ক) প্রলয় খ) দিনেশ গ) শ্যাম ঘ) পৃথ্বি
১২। খাঁটি বাংলা উপসর্গ কয়টি?
ক) ১৮টি খ) ২১টি ঘ) ২৩টি ঘ) ২৫টি
১৩। নিম্নোক্ত কোন দু’টি শব্দ বাংলা ভাষা গ্রহণ করেছে চীনা ভাষা হতে?
ক) হরতাল, জয়ন্তী খ) ইমাম, উকিল
গ) আইন, আমীর ঘ) চিনি, চা
১৪। বাক্য কত প্রকার?
ক) দুই প্রকার খ) তিন প্রকার
গ) চার প্রকার ঘ) পাঁচ প্রকার
১৫। ‘চোখাচোখি’ কোন সমাসের উদাহরণ?
ক) ব্যতিহার বহুব্রীহি খ) নঞ তৎপুরুষ
গ) অব্যয়ীভাব ঘ) উপপদ তৎপুরুষ
১৬। ‘কলির সন্ধ্যা’ বাগধারার অর্থ কী?
ক) শুভ সূচনা খ) শুভ সমাপ্তি
গ) কষ্টের সূচনা ঘ) কষ্টের সমাপ্তি
১৭। ‘রেস্তোরাঁ’ কোন ভাষার শব্দ?
ক) তুর্কি খ) পর্তুগিজ গ) চীনা ঘ) ফরাসি
১৮। ‘জানিবার ইচ্ছা’-এর বাক্য সংকোচন কী?
ক) জিজ্ঞাসা খ) আগ্রহ গ) ইচ্ছুক ঘ) আগ্রহী
উত্তর : ১. খ ২.ক ৩.গ ৪.ঘ ৫.গ ৬.ক ৭.ঘ ৮.ক ৯.গ ১০.খ ১১.গ ১২.খ ১৩.ঘ ১৪.খ ১৫.ক ১৬.গ ১৭.ঘ ১৮.ক।
তথ্যসূত্র: নয়াদিগন্ত
Labels:
বাংলা,
বিসিএস প্রস্তুতি,
বিসিএস প্রিলিমিনারী
অনলাইনেই পরীক্ষা দিয়ে আপনার বিসিএস প্রস্তুতি যাচাই করে নিন
পোস্টটি লিখেছেন: কবিয়াল নূর
আপনি কি বিসিএস পরীক্ষার্থী? ব্যাংক পরীক্ষার্থী? পিসিএস এর পরীক্ষার্থী? তাহলে আপনার জন্য অনলাইনেই রয়েছে ফ্রি পরীক্ষা দেয়ার সুবর্ণ সুযোগ! একদম বিসিএস পরীক্ষার ন্যায় প্রশ্নপত্র এবং সাথে সাথে সমাধানের ব্যবস্থা রয়েছে। নিচের লিংক দুটি ঘুরে আসুন। আশা করি ভাল লাগবে, উপকৃত হবেন।
১. প্রথমআলো অনলাইন পরীক্ষা
২. প্রফেসর'স অনলাইন পরীক্ষা
চালিয়ে যান। নিজেকে প্রস্তুত রাখুন সময়ের সাথে। ভালো থাকুন। আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।
আপনি কি বিসিএস পরীক্ষার্থী? ব্যাংক পরীক্ষার্থী? পিসিএস এর পরীক্ষার্থী? তাহলে আপনার জন্য অনলাইনেই রয়েছে ফ্রি পরীক্ষা দেয়ার সুবর্ণ সুযোগ! একদম বিসিএস পরীক্ষার ন্যায় প্রশ্নপত্র এবং সাথে সাথে সমাধানের ব্যবস্থা রয়েছে। নিচের লিংক দুটি ঘুরে আসুন। আশা করি ভাল লাগবে, উপকৃত হবেন।
১. প্রথমআলো অনলাইন পরীক্ষা
২. প্রফেসর'স অনলাইন পরীক্ষা
চালিয়ে যান। নিজেকে প্রস্তুত রাখুন সময়ের সাথে। ভালো থাকুন। আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।
৩২ তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা প্রস্তুতিঃ প্রসংগ সংবিধান
প্রস্তাবনাঃ
(ব্যস্ত পাঠক এই অংশটুকু বাদ দিতে পারেন)
সুপ্রিয় পরীক্ষার্থীবৃন্দ,
ক। আশা করি আপনারা সবাই চমৎকারভাবে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।৩১তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা আক্ষরিক অর্থেই দরজায় কড়া নাড়ছে এবং মাত্র একমাস পরেই শুরু হতে যাচ্ছে এই “মহারণ”।শেষ এক-দুদিন “BCS: Our Goal” গ্রুপে প্রয়োজনীয় বিষয়ের চাইতে অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে বেশি আলাপ-আলোচনা হয়েছে বলে অনেক সম্মানিত সদস্য অভিযোগ করেছেন।আমি এই অভিযোগ মাথা পেতে নিচ্ছি এবং এটি হবার পেছনে আমারো কিছুটা দায় রয়েছে সেটাও নতমস্তকে স্বীকার করছি।আমার আজকের লেখাটি অনেকটা সেই দায়বদ্ধতা থেকে প্রসূত।নানারকম অপ্রয়োজনীয় আলোচনায় আমি আপনাদের যেটুকু মূল্যবান সময় নষ্ট করেছি, এই লেখাটি সেই ক্ষতে সামান্য হলেও প্রলেপ দিতে পারে-এটাই আমার প্রত্যাশা।
খ। মূল বিষয় আলোচনা করার আগে বিসিএস পরীক্ষার ঠিক একমাস আগে অর্থাৎ এরকম সময়ে আমার যে অনুভূতি হত তা কিছুটা আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিই।চলতি বাংলায় যাকে বলে “বিশাল গাড্ডায় পড়া”- আমার অনুভূতি ছিল ঠিক এরকম।গাড্ডা শব্দটির অর্থ আমি জানিনা,সম্ভবত সমুদ্র বা এরকম কিছু।বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাসের সাথে আটলান্টিক মহাসাগরের তুলনা করলে যে খুব ভুল কিছু হবেনা তা আমার মত “ভুক্তভোগী” মাত্রই স্বীকার করবেন।আর পরীক্ষার একমাস আগে এই আটলান্টিকের গভীরতা বেশির চাইতেও বেশি হয়ে প্রায় সব পরীক্ষার্থীর চোখেই ধরা দেয়।প্রতিদিন পড়তে বসতাম, এক-দুটি বিষয়(topic)এর পেছনে কয়েক ঘন্টা ব্যয় করতাম,তারপর সেগুলো মনে করার চেষ্টা করে দেখতাম অধিকাংশই ভুলে গিয়েছি।দিনশেষে ঘুমাতে যাবার সময় মনে হত-হায় হায়,আরো একটা দিন শেষ হয়ে গেল,কিছুই তো পড়া হলনা!
গ। প্রিয় পাঠক,আপনার যদি এরকম কিছু হয়ে থাকে তাহলে বলব প্লিজ হতাশ হবেন না।উইন্সটন চার্চিল বলেছিলেন- “ If you are going through hell, get going!”
আপনাদেরকেও একজন সহযাত্রী হিসেবে বলি,এত ভয়ঙ্কর পরিশ্রম যখন করেছেন,এই তো আর মাত্র কটা দিন,করুন না আরেকটু কষ্ট!যা পড়বেন তার হুবহু মনে থাকবে এমনটি কখনোই হবেনা।যেটি হবে,এই এখান থেকে একটু ওখান থেকে আরেকটু এরকম করে দীর্ঘদিন প্রস্তুতি নিতে নিতে আপনার অজান্তেই চমৎকার একটা ভিত্তিমূল বা Basic তৈরি হবে।পরীক্ষার হলে দেখবেন এই বেসিকটা আপনাকে খুব ভালোভাবেই বৈতরণী পার হতে সহায়তা করছে।
ঘ। শিব খেরার “You Can Win” বইটিতে এ ব্যাপারে একটি মজার উদাহরণ পড়েছিলাম।প্রাচীনকালে যখন আধুনিক যন্ত্রপাতি ছিলোনা,মানুষ তখন কুড়াল দিয়ে আঘাত করে পাথর কাটতো।দেখা যেত,একজন মানুষ পাথরের বিশাল একটি টুকরোর উপরে ঘন্টার পর ঘন্টা কুড়াল দিয়ে আঘাত করেই যাচ্ছে,পাথরের টুকরার কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা।এভাবে এক-দুইশ বার আঘাত করার পর হঠাৎ দেখা যেত একশতম আঘাতের সাথে সাথে পাথরের টুকরাটি দ্বিখণ্ডিত হয়ে পড়েছে।আমরা বাইরে থেকে দেখছি যে একশতম আঘাতের ফলেই পাথরটি দুটুকরো হল-কিন্তু আসলেই কি তাই? প্রথম থেকে শুরু করে প্রতিটি আঘাত পাথরটিকে দুর্বল করেছে,তারপর সর্বশেষ আঘাত সেটিকে দ্বিখণ্ডিত করেছে।
ঙ। আমার মনে হয় এই একমাস আগে আমাদের অনেকের অবস্থাই এরকম-প্রচুর পড়াশোনা করছি কিন্তু টেরই পাচ্ছিনা আদৌ কোন উন্নতি হচ্ছে কিনা।প্রিয় পরীক্ষার্থী, বিশ্বাস করুন- আপনি নিজে বুঝতে না পারলেও এই ঘন্টার পর ঘন্টা পরিশ্রম প্রতিদিন আপনাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।হতাশা ঝেড়ে ফেলুন, মাথায় যে চিন্তাই আসুক না কেন নিজেকে পরিশ্রমের নতুন পর্যায়ে উন্নীত করুন। বলা তো যায়না,হয়তো দেখা যাবে নিজের অজান্তেই আপনি পছন্দের ক্যাডারের প্রথম স্থান দখল করে বসে আছেন!
পুনশ্চঃ ১)এখানে “দীর্ঘদিন” বলতে প্রিলি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত সময় বুঝিয়েছি।এ কদিন আপনি যদি শুধু দিনে ৫-১০ মিনিট খবরও দেখে থাকেন বা পত্রিকা পড়েন,এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিসগুলোও নিশ্চিতভাবে আপনার বেসিক তৈরিতে ভূমিকা রেখেছে।কাজেই, “হায় হায়,আমি তো দীর্ঘদিন প্রস্তুতি নেইনি”-এমনটি ভেবে আফসোস করা থেকে বিরত থাকুন!
২) শুরু করার আগে আমার আগের আর্টিকেলগুলোর মত এখানেও বলে নিই-আমি এখানে শুধুমাত্র নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছি,আপনাদের কাউকে জ্ঞান দেবার মত ধৃষ্টতা আমার নেই।আমার কোন পরামর্শ আপনি যদি অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করেন তাহলে নির্দ্বিধায় তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।এটা কোন স্কুল কলেজ নয় এবং আমিও কারো শিক্ষক নই যে আমার কথা বেদবাক্যের মত অভ্রান্ত হবে।বিসিএস পরীক্ষায় আমার চাইতে অনেক বেশি নম্বর পেয়েছেন এরকম অসংখ্য মানুষ রয়েছেন এবং তাঁদের কেউ কেউ এই গ্রুপেই রয়েছেন।আপনি একজন শিক্ষিত মানুষ,কাজেই প্রস্তুতির ব্যাপারে আপনার নিজস্ব সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত।
প্রসংগ-সংবিধান
কেন সংবিধানের পেছনে অতিরিক্ত সময় দেবেনঃ
১)বাকি আর্টিকেলগুলো লেখার সময় আমি মোটামুটি নির্দিষ্ট একটি কাঠামোতে প্রস্তুতি নেবার ব্যাপারে আলোচনা করেছি এবং নম্বর বন্টন অনুযায়ী বর্ণনা দিয়েছি।বাংলাদেশ বিষয়াবলীর ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে,সিলেবাস এতটাই বিস্তৃত যে বাংলাদেশের ইতিহাস,ভূগোল,পৌরনীতি,অর্থনীতি,সমাজনীতি ইত্যাদি প্রায় সবকিছুই এখানকার অন্তর্ভুক্ত করে দেয়া হয়েছে।পরীক্ষার মাত্র একমাস আগে এটার সিলেবাস দেখে আমি নিজে মোটামুটি মুর্ছা গিয়েছিলাম,হয়তো আপনাদেরও কেউ কেউ যাচ্ছেন!বাংলাদেশ বিষয়াবলীর ব্যাপারে টপিকভিত্তিক সাজেশন দেবার মত বিশ্লেষণ-ক্ষমতা আমার নেই,তবে এই একমাসে কেউ যদি বলেন যে দুইশত নম্বরের মধ্যে নিশ্চিতভাবে ৫০ নম্বর বা তারও অধিক “কমন” পেতে কোন বিষয়টি ভালোভাবে পড়া উচিত-তাহলে আমি এক কথায় উত্তর দেবো-“সংবিধান”।
২)দুঃখের বিষয়,একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে প্রত্যেক বাংলাদেশীর ক্ষেত্রেই সংবিধান পাঠ আবশ্যক অথচ বিসিএস পরীক্ষা দেবার আগে সংবিধান উলটে দেখার সৌভাগ্য(?) আমার হয়নি।আমাদের দেশটি আসলে কিভাবে চলে এটি বুঝতে সংবিধান পাঠের বিকল্প নেই।আর আগে ওই যে বললাম “বেসিক”,এই “বেসিক” শক্ত করতে সংবিধান পাঠ যে কতটা দরকারী তা বলে বোঝানো যাবেনা।সুনাগরিক হওয়া,দেশকে জানা ইত্যাদি বৃহৎ লক্ষ্যের জন্যে সংবিধান পাঠ আবশ্যক,তবে আমাদের ঠিক নাকের ডগায় যে পরীক্ষাটি উঁকি দিচ্ছে,সেই বিসিএস পরীক্ষায় “বাংলাদেশ বিষয়াবলী” তে ভালো নম্বর তুলতেও সংবিধান পাঠ করা একান্ত জরুরী।
৩)বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে যে কেউ দেখতে পাবেন বাংলাদেশ প্রথম এবং দ্বিতীয়পত্র মিলিয়ে প্রতিবারই ৫০+ নম্বর কম করে হলেও সংবিধান থেকে প্রশ্ন হয়েছে।এছাড়া,সংবিধান থেকে প্রশ্নের উত্তর দিলে ২০ নম্বরের রচনামূলক প্রশ্নে খুব অল্প লিখেও সহজেই ১৫+ নম্বর পাওয়া যায়,যেখানে অন্যান্য প্রশ্নের উত্তরে গাদা গাদা লিখেও আপনি ১২ বা ১৩ এর বেশি পাবেননা।একটা খুব বাস্তব উদাহরণ দিচ্ছিঃ মুসলিম যেসব পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় ইসলামিয়াত পরীক্ষা দিয়েছেন তাঁরা সবাই জানেন যে সুত্র উল্লেকপূর্বক আরবি আয়াত লিখলে প্রায় ৮০-৯০ ভাগ নম্বরও তোলা যায়।বাংলাদেশ বিষয়াবলীর সরাসরি সংবিধান বিষয়ক এমনকি কাছাকাছি কোন প্রশ্নের উত্তরে যদি আপনি বাংলাদেশ সংবিধান থেকে আর্টিকেল নম্বর উল্লেখ করে ভিন্ন রঙের কালিতে(সাধারণত নীল) কোটেশন তুলে দিতে পারেন তাহলে গড়পড়তা নম্বরের চাইতে অবশ্যই বেশি পাবেন।
কিভাবে পড়তে হবেঃ
১)সংবিধান পড়তে গিয়ে প্রথমেই আমার যে সমস্যা হয়েছিলো সেটি হচ্ছে এর প্রায় মাইকেল মধুসূদন দত্তের কাছাকাছি কঠিন ভাষা।মুখস্তবিদ্যায় আমি ভয়াবহ রকমের খারাপ,সংবিধানের এরকম ভাষা লাইন-বাই-লাইন মুখস্ত করা আমার পক্ষে আক্ষরিক অর্থেই অসম্ভব ছিলো।তবে সুখের বিষয়,লাইন-বাই-লাইন সংবিধান মুখস্ত করবার কোন দরকার নেই।আপনি সংবিধানের আর্টিকেলগুলো পড়বেন,বুঝতে চেষ্টা করবেন এতে কি বলা হয়েছে এবং এরপর সম্পূর্ণ নিজের ভাষায় লিখবেন।
২)আগেই বলেছি যে সংবিধান লাইন বাই লাইন মুখস্ত করবার দরকার নেই,তবে একটি জিনিস করতে পারলে সবচাইতে ভালো হয়ঃ সংবিধানে যে ১৫৩টি আর্টিকেল রয়েছে তাদের নাম মুখস্ত করে ফেলা।যেমনঃ আর্টিকেল ১ এর শিরোনাম হচ্ছে “প্রজাতন্ত্র”,আর্টিকেল ৫ এর শিরোনাম “রাজধানী” ইত্যাদি।১৫৩টি আর্টিকেলের নাম যদি মুখস্ত করতে পারেন(এটা এই ১ মাসেও খুব সম্ভব-এর পেছনে যে সময় আপনি ব্যয় করবেন তার এক সেকেন্ডও বৃথা যাবেনা) তাহলে সংবিধানটি ৪-৫ বার ভালোভাবে পড়লেই যেখান থেকেই প্রশ্ন আসুক না কেন নিজের ভাষায় লিখতে পারবেন।
৩)সংবিধান থেকে প্রতিবার কিছু গৎবাধা প্রশ্ন আসে-এগুলো বিগত বিসিএসের প্রশ্ন দেখলেই বুঝতে পারবেন।এধরণের গৎবাধা প্রশ্নের মধ্যে রয়েছেঃ
ক)সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রের মূলনীতি ব্যাখ্যা করুন
খ)সংবিধান অনুসারে আমাদের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে আলোকপাত করুন
গ) সংবিধানের এ পর্যন্ত যতগুলো সংশোধনী হয়েছে তাদের সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করুন
ঘ) বাংলাদেশের সংবিধান রচনার পটভূমি ও ইতিহাস বর্ণনা করুন
ঙ) বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আলোচনা করুন ইত্যাদি।
এছাড়া একটু “আনকমন” প্রশ্ন হিসেবে মাঝে মাঝে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী, অর্থবিল, মন্ত্রীসভা ইত্যাদি এসে থাকে।
৪)টীকা হিসেবে সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন আর্টিকেলের শিরোনাম থেকে ২৮তম বিসিএসে সরাসরি ২০ নম্বর এসেছিলো।১০ টি শিরোনাম সম্পর্কে অল্প একটু সঠিক বর্ণনা যারা দিয়েছেন তারা একেবারে অঙ্কের মত নম্বর পেয়েছেন।প্রতিবারই সংবিধানের আর্টিকেল থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন/টীকা থাকে,তাই সব না হলেও অন্তত পূর্ববর্তী বছরে এসেছে এগুলো এবং গুরুত্বপূর্ন মনে হয় এমন আর্টিকেলগুলোর শিরোনাম,আর্টিকেল নম্বর এবং ভেতরে কি আছে মোটামুটি নিজের ভাষায় লেখার মত প্রস্তুতি থাকাটা খুব জরুরী।
৫)৩১তম
এক নজরে আনন্দ মোহন কলেজ তথ্যাবলি
প্রতিষ্ঠা বছর | ১৯০৮ |
সরকারিকরণ | ১৯৬৪ |
মোট আয়তন | ১৫.২৮ একর |
ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা | প্রায় ২৮ হাজার |
শিক্ষক পদসংখ্যা | ২০১ টি |
অধ্যাপক | ১৪ জন |
সহযেগী অধ্যাপক | ৪৩ জন |
সহকারী অধ্যাপক | ৬১ জন |
প্রভাষক | ৭০ জন |
প্রদর্শক | ০৮ জন |
শরীরচর্চা শিক্ষক | ০১ জন |
গ্রন্থাগারিক | ০১ জন |
সহগ্রন্থাগারিক | ০১ জন |
ছাত্রাবাস | ০৩টি |
ছাত্রীনিবাস | ০২টি |
বিভাগের সংখ্যা | ১৯টি |
মোট অনুষদ | ০৪টি |
গ্রন্থাগারের মোট পুস্তক সংখ্যা | প্রায় ৪৮,০০০ |
মসজিদ | ০১টি |
অতিথি ভবন | ০১টি |
শিক্ষক ডমেনটরী | ০১টি |
পাওয়ার স্টেশন | ০১টি |
বাস | ০১টি |
মাইক্রোবাস | ০১টি |
স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর বিভাগ সমূহ
বাংলা | সমাজকর্ম© | পদার্থবিদ্যা |
ইংরেজী | সমাজবিজ্ঞান | রসায়নবিদ্যা |
ইতিহাস | ইসলাসমক স্ট্যাডিজ | উদ্ভিদবিদ্যা |
রাষ্ট্রবিজ্ঞান | ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি | প্রাণিবিদ্যা |
অর্থনীতি | ভূগোল ও পরিবেশ | ব্যবস্থাপনা |
দর্শন | গণিত | হিসাববিজ্ঞান |
সংস্কৃত |
তথ্যসূত্র: আনন্দ মোহন কলেজ ওয়েব সাইট
Subscribe to:
Posts (Atom)